“শ্রমিকের ঘামের টাকায় কোটিপতি টেম্পু মঈন” | তদন্ত রিপোর্ট

বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ১০:০২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
৩য় শ্রেণির কর্মচারী জাহাঙ্গীর অঢেল সম্পদের মালিক জগন্নাথপুরে এলজিইডি প্রকল্পের রাস্তার কাজে  অনিয়ম, তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দাবি নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মানববন্ধন ফ্যাসিসের দোসররা বিভিন্ন ভাবে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে: খন্দকার মুক্তাদির চোরাচালান বন্ধে এসএমপি সোচ্চার হলেও জেলা রহস্যজনক ছিন্নমূল পথশিশুদের সাথে সিলেটে ছাত্রদলের ইফতার ও দোয়া মাহফিল সিলেটে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত। সিলেটে ফুটপাত দখলমুক্ত আন্দোলনে ব্যবসায়ীদের সমর্থন, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি ওসির প্রস্তাব না রাখায় জলমহালের মাছ লুণ্ঠন দক্ষিণ সুরমায় বিএনপি নেতা এমএ মালিকের পক্ষ থেকে দুঃস্থদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ
“শ্রমিকের ঘামের টাকায় কোটিপতি টেম্পু মঈন”

“শ্রমিকের ঘামের টাকায় কোটিপতি টেম্পু মঈন”

তদন্ত রিপোর্ট প্রতিবেদক: সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মৃত আবদুর রহিমের পুত্র কাজী রুনু মিয়া মঈন উরফে টেম্পু মঈন। টেম্পু মঈন ছিল এলাকার এলাকার ছিঁচকা চোর। তার যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ ছিলেন এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষজন। হাস, মুরগি, ধান, সুপারী, কাপড়সহ হাতের সামনে যা পড়ত সেসব রুনু চুরি করত। চুরিতে কয়েকবার ধরা পরে একটা সময় জড়িয়ে পড়েন চোরাচালানে। একাধিক চোরাকারবারির ভারতীয় চিনি থেকে গরুসহ মাদক পাচার করে দিতেন। ১৯৭৯ সালে গরু চুরির ঘটনায় গ্রাম ছেড়ে সিলেট শহরতলীর বাহুবলে আসেন। সেখানে প্রথম প্রথম দিনমুজুর হিসেবে কাজ করত টেম্পু মঈন। পরে নগরীর লামাপাড়া এলাকার একটি গ্যারাজেরের রিকশা দৈনিক ভাড়ায় চালানো শুরু করেন। কিছুদিন রিকশা চালানোর পর হয়ে উঠেন তৎকালীন বেবিট্যাক্সি ড্রাইভার। ১৯৯৮ সালে বেবিট্যাক্সি ছেড়ে পা রাখেন টেম্পুর জগতে। সেখান থেকেই উত্থান ঘটেছে টেম্পু মঈনের। সিলেট জেলা টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের ২০০৫ সালে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে বনে গেছে টেম্পু মঈন।

১৩২৬ নম্বরে চট্টগ্রাম থেকে নিবন্ধিত এ ইউনিয়নটি বর্তমানে সিলেট জেলা হিউম্যান হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়ন নামে পরিচিত।বিভিন্ন পত্রিকা ও এলাকার কয়েকজনের তথ্য সুত্রে জানা যায়, শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হওয়ার পরই রুনু মিয়ার জীবনচিত্র পাল্টাতে থাকে। কাঁচা টাকা আসতে থাকে তার পকেটে। শ্রমিকদের শ্রম-ঘামের টাকা দিয়ে শুরু করেন জায়গা-জমির ব্যবসা। স্থানীয় প্রভাবশালী ‘ মামা খন্দকারে’র সাথে মিলে এ ব্যবসায় দুহাতে টাকা কামাতে থাকেন। শ্রমিকদের টাকা আর জায়গার দালালি করে টাকার দাপটে তার কিছু সঙ্গী-সাথীও জুটে যায়। ২০০৫ সালে সেই যে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তারপর আর এ পদ তিনি আর ছাড়েন নি। মেয়াদ শেষে নির্বাচন না দেওয়ায় কমিটির ৬ সদস্য পদত্যাগও করেন অবৈধ কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ইনসান আলীকে সঙ্গী করেই চলছে তার সকল অপকর্ম। রুনু মিয়ার রয়েছে একটি মামলাবাজ বাহিনী। এলাকায় কেউ লোন ধরনের প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের ঘায়েল করত এ বাহিনী। আওয়ামিলীগ সরকারের আমলে টেম্পু মঈনের পুত্র সোহেল, রুবেল ও জাকির তাদের বহিনী মিলে এলাকায় কায়েম করেছিল সন্ত্রাসের রাজত্ব। জায়গা দখল, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও মাদকব্যবসাসহ এমন কোন কাজ নেই তারা করেনি।

অনুসন্ধানে মিলে, দীর্ঘদিন সভাপতি থেকে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন রুনু মিয়া। এ অভিযোগেও সিলেটের শ্রম আদালতে মামলা হয়েছিল। শ্রমিকদের ভাষ্যমতে- ১৮ বছরের কোনো টাকারই হিসাব পাননি তারা। এমনকি ইউনিয়নের নামে কোনো অ্যাকাউন্টও নেই। রুনু মিয়ার পকেটই যেনো ইউনিয়নের অ্যাকাউন্ট। ইউনিয়নের নামে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করেছেন তিনি। গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করেই সদস্য অন্তর্ভুক্তির নামে ১ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করেন তিনি। প্রতি বছর সদস্য নবায়নের নামে আড়াই হাজার সদস্যের কাছ থেকে আরও ১২০ টাকা করে আদায় করা হয় ইউনিয়য়নের নামে। লাইন খরচ নামে মাসে আরও ৬শ টাকা করা হয় সদস্যদের কাছ থেকে। দৈনিক চাঁদা দিতে হয় আরও ৪০ টাকা করে। সব কিছু হিসেব নিকেশ করে শ্রমিকরা বলছেন, অন্তত ৪৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ঢুকেছে রুনু মিয়ার পকেটে। চুরির ঘটনায় সিলেট আসা রুনু মিয়া মঈনের সম্পদের দিকে তাকালে হয়তো সে হিসেব মিলতে পারে। এক সময়ের দিনমজুর ও রিকশাচালক রুনু মিয়ার এখন খাদিমনগরে ৫/৬টি বাড়ির মালিক। জকিগঞ্জেও রয়েছে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। সেই সাথে সিলেটে অন্যান্য স্হানেও রয়েছে তার অবৈধ সম্পদ।

সুত্রমতে, রুনু মিয়া তার বাসার একটিকাজের মেয়েকে ধর্ষন করতে গিয়ে ফেসে যায়। সে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য ঐ মেয়েকে কয়েক লাখ টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে। সুত্র মতে ঐ মেয়ের বাড়ি নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলায়। রুনু মিয়ার ছেলেদের ব্যাপারে এলাকায় কেউ কোন বিচারপ্রার্থী হলে তাদেরকে ডেকে নিয়ে পিটানো হত। মামলার ভয় দেখিয়ে তাদেরকে কোনঠাসা করে রাখা হত। রুনু মিয়ার ছেলে আওয়ামিলীগের নেতা পরিচয়ে এলাকায় সব ধরনের অবৈধ কাজ করত বলেও কয়েকন জানান। রুনু মিয়া গ্রেফতারে বর্তমানে এলাকায় শান্তি বিরাজ করছে। আলাপকালে এলাকাবাসী জানান, রুনু মিয়ার কঠিন শাস্তি আমরা চাই সেই সাথে তার সকল সম্পদের উৎস খোজে বের করাও প্রয়োজন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo