ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ অবজ্ঞা করছে স্বাস্থ্য পরিচালকের নোটিশ, লাপাত্তা রুবেল-সামছু | তদন্ত রিপোর্ট

সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টে চলছে ব্ল্যাক টিকেট বাণিজ্য সিলেটে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে ছাড়াতে বাদির চুক্তি ৩ লাখ, আদালতপাড়ায় কানাঘুষা ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ অবজ্ঞা করছে স্বাস্থ্য পরিচালকের নোটিশ, লাপাত্তা রুবেল-সামছু গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান, সেবাগ্রহীতারা সমস্যায় আ.লীগের পরিবর্তনে টালমাটাল দারোগা ইবায়দুল্লাহ পিরের বাজারের দুই কিশোরীকে দিয়ে কক্সবাজারে দেহ ব্যবসা: জড়িত মা-ছেলে সাত বছরে কোটিপতি আ.লীগ দোসর পলাশ, থামছেনা দৌরাত্ব! গোয়াইনঘাটে জুড়ে কাশেম-বাবলা’র রামরাজত্ব ছাতকে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলনের হিড়িক, জিম্মি আমজনতা ওসমানীনগরে লেংড়া এমরানের নেতৃত্বে কুশিয়ারার বালু লুটপাট 
ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ অবজ্ঞা করছে স্বাস্থ্য পরিচালকের নোটিশ, লাপাত্তা রুবেল-সামছু

ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ অবজ্ঞা করছে স্বাস্থ্য পরিচালকের নোটিশ, লাপাত্তা রুবেল-সামছু

তদন্ত রিপোর্ট ডেস্ক: সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জনবল নিয়োগে প্রায় ২ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ‘সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড’ এর বিরুদ্ধে। আউটসোর্সিংয়ের ৬ মাসের জন্য জনবল নিয়োগের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি পরিকল্পনা করছে আগামী ২ বছর চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার। দায়িত্ব নিয়েই হাসপাতালের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে আঁতাত করে এই লেনদেন করছেন বলে অভিযোগ উঠে।

অনুসন্ধানে, সাউদিয়া সিকিউরিটির দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য। জনবল নিয়োগে প্রতিটি পদের জন্য এক লাখ থেকে ৮০ হাজার টাকা করে নেয়া হচ্ছে।

দরপত্র অনুযায়ী সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ১০টি পদে ২৬২ জন লোক নিয়োগ করা হবে মাত্র ৬ মাসের জন্য। এই টেন্ডারটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাগিয়ে নিয়েছে সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস। এই কোম্পানীর মালিক এক সময়ের যুবলীগ নেতা রুবেল আহমদ ও যুবলীগ কর্মী সামছু জ্জামান। তাদের নামেই এই দরপত্রটি ইস্যু হয়েছে এবং তাদের নামেই এই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স। জনবল নিয়োগে এখানে টাকা লেনদেন হচ্ছে। এই কোম্পানীর নেপথ্যে রয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, সিলেট মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব বাবলুর ছোট ভাই সিলেট মহানগর যুবলীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল খালিক লাভলু। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একচেটিয়া দাপট খাটিয়ে ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, সিলেট মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব বাবলু। যিনি এখনও জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হামলা মামলার আসামী হয়ে বর্তমানে পলাতক। এর আগে দীর্ঘদিন থেকে সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানীর এক সময়ের যুবলীগ নেতা রুবেল আহমদ ও যুবলীগের সামছুজ্জামানকে শেল্টার দিতেন। বর্তমানে তারই ছোটভাই সিলেট মহানগর যুবলীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল খালিক লাভলু যিনি যুবলীগ নেতা রুবেল আহমদ ও সামছুজ্জামানকে শেল্টার দিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে, সিলেট ওসমানী মেডিকেলে নিয়োগপ্রাপ্ত আউটসোর্সিং কর্মচারীরা বিপাকে। ৬ মাসের নিয়োগ শর্তের বিপরীতে কোম্পানী জনপ্রতি লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও দুর্ভোগের শেষ নেই তাদের। কারো কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছেনা, আবার কেউ কেউ কাজ করলেও কাগজপত্রে তাদের নেওয়া হচ্ছে না স্বাক্ষর। ফলে কোম্পানী নতুন নতুন অজুহাত সৃষ্টি করে বেতন ফাঁকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। নিয়োগ বাণিজ্যের মূল হোতা বিতর্কিত রুবেল আহমদ, সামছু আহমদ ও জসীম উদ্দিন।

বকেয়া বেতন ও চাকরি ফিরে পেতে গত মঙ্গলবার মেডিকেলে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকেরা। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে আশ্বাসে তারা মেডিকেল ছাড়েন। এর আগে হরিজন সম্প্রদায়ের সহ-সভাপতি পান্নু লাল সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড’ এর বিরুদ্ধে একাধিক দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য পরিচালক সিলেট কার্যালয় থেকে গত ২৪ মার্চ এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বারবার একটি নোটিশ পাঠানো হয়।

সেই নোটিশে উল্লেখ করা হয় সিলেট জেলার হরিজন সম্প্রদায়ের পক্ষে হরিজন সম্প্রদায়ের সহ-সভাপতি পান্নু লালের বিষয়টি আমলে নিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগে দুর্নীতিবাজ “সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড” এর টেন্ডার বাতিল ও হরিজন সম্প্রদায়ের ৪০ জন লোকের চাকুরি ফিরে পাওয়ার আবেদন প্রেরণ প্রসংগে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ একমাস অতিবাহিত হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন আন্দোলন করেছেন।

সিলেট জেলা হরিজন সম্প্রদায়ের সহ-সভাপতি পান্নু লাল জানিয়েছেন, গালফ ও আল আরাফাহ সিকিউরিটি সার্ভিসের মাধ্যমে তৎকালীন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া আমাদের সম্প্রদায়ের ৪০ জন লোককে হাসপাতালে নিয়োগ প্রদান করেন। তখন তারা সবাই সিলেট সিটি কর্পোরেশনে চাকরিতে ছিলো। কিন্তু মেডিকেলের পরিছন্নতার স্বার্থে পরিচালক আমাকে বলেন। পরে আমি এই ৪০জন লোককে সিটি থেকে চাকুরি বাদ দিয়ে হাসপাতালে নিয়োগ করি। তাদের নিয়োগের মেয়াদ রয়েছে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিসের রুবেল ও সামছু আমাদের লোকদের চাকরি থেকে বাতিল করে দিয়েছে। পরে আমি রুবেল ও সামছুর সাথে যোগাযোগ করি তারা আমাকে টাকা দিয়ে নিয়োগ চূড়ান্ত করার কথা বলেন।

এরপর আমি ওসমানী মেডিকেলের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তীর সাথে যোগযোগ করি। তিনি আমাকে কোন আশ্বাস না দিয়ে বলেন আমার মেডিকেলের স্টাফদের সুযোগ দিতে পারছি না আর আপনার লোকদের কি ভাবে দিবো?

এদিকে গত ৩০ মার্চ কাষ্টঘরে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকদের জনপ্রতি ১ লাখ টাকা করে নেয়ার জন্য এসেছিলেন রুবেল আহমদসহ ক’জন। পরে হরিজন সম্প্রদায়ের তোপেরমুখে পরে তিনি কৌশলে তারা পালিয়ে যান।

বিষয়টি জানতে সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিসের রুবেল আহমদকে কল করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo
error: Content is protected !!