নিজস্ব সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশায় উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়ন যুবদলের বিতর্কিত সভাপতি জালাল উদ্দিন ও তার আপন ছোট ভাই একই ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য জিয়া উদ্দিনের নেতৃত্বে ওই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ওপেন চলছে জমজমাট মাদকের আখড়া ও জুয়ার আসর। এই দুইভাই মাদক ও জুয়ায় লিপ্ত থাকার অভিযোগ নিত্যদিনের। এই আপন দুই ভাই মাদক ও জুয়ার সম্রাট হিসেবে এলাকা জুড়ে রয়েছে ব্যাপক নাম ডাকও। ইতিমধ্যে এই আপন দুই ভাইয়ের প্রকাশ্য মরণব্যাধি মাদক ইয়াবা সেবন ও জুয়া খেলায় মগ্ন থাকার বেশ কয়েকটি ভিডিও এসেছে সাপ্তাহিক তদন্ত রিপোর্ট পত্রিকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে।
ভিডিও দেখা যায়, পাইকুরাটি ইউনিয়ন যুবদলের বিতর্কিত সভাপতি জালাল উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন প্রকাশ্য জুয়া খেলছে। এছাড়াও তার সাথে জুয়া খেলায় মগ্ন রয়েছেন ধর্মপাশা উপজেলার বিএনপির সাবেক সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক।
অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, যুবদল সভাপতি জালাল উদ্দিনের আপন ছোট পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য জিয়া উদ্দিন মরণব্যাধি মাদক ইয়াবা সেবন করছেন।
অভিযোগ রয়েছে, জালাল ইউনিয়ন সভাপতির পদ ভাগিয়েই দলীয় পদকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে প্রকাশ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন ১০টি জুয়ার আসর। আর তার আপন ছোট ভাই ইউপি সদস্য জিয়া জন-প্রতিনিধি ও তার ভাইয়ের দলীয় নেতাকর্মীর ক্ষমতা বলে প্রকাশ্য ইউনিয়ন পরিষদকে রুপান্তরিত করেছেন মাদক সেবনের আখড়ায়। সবমিলিয়ে তাদের দুই ভাইয়ের এসব কর্মকান্ড যেনও সিনেমার ভিলেনের মত রাজত্ব কায়েম করার দিবাস্বপ্ন। তবে এই দুই ভাইয়ের নেপথ্যের গডফাদার হিসেবে গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে পাইকুরাটি ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি জালাল উদ্দিনের ব্যবহৃত নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথমে নিশ্চিত করেন জালাল উদ্দিন বলে কিন্তু সাংবাদিক শুনেই তিনি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে পাইকুরাটি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য জিয়া উদ্দিনের ব্যবহৃত নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনিও সাংবাদিক শুনে রং বলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৫টা ৫৬ মিনিট ও ৫টা ৫৯ মিনিটে অভিযুক্ত এই আপন দুই ভাইকে ফোন দেওয়ার পর ৬টা ০২ মিনিটে ০১৭১১____৪৬৪ নাম্বার থেকে তদন্ত রিপোর্ট পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের নাম্বারে ফোন দিয়ে তিনি ধর্মপাশা উপজেলা থেকে ফোন দিয়েছেন মর্মে জানিয়ে সাংবাদিকের পরিচয় যাচাই-বাছাই করার অপচেষ্টা চালান। পরবর্তীতে তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে সরকারি কর্মকর্তা দাবি করেন। উপজেলা সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে সাংবাদিককে কৌশল ভয়ভীতি দেখানো নাম্বারের ব্যক্তির অনুসন্ধানে নামেন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। ওই নাম্বারের ব্যক্তির নাম ওলি। তিনি ওই ইউনিয়নের আওতাধীন সুনুই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ওলি নামের এই শিক্ষক জুয়াড়ির নিয়ন্ত্রক ও যুবদল সভাপতি জালালের সহযোগী বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দা। এ শিক্ষকও এই দুই ভাইয়ের ক্ষমতা বলে স্কুল সহ এলাকায় নানান অনিয়ম ও অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগও করেন তারা। এদিকে এবিষয়ে সংবাদ না করার জন্য ওলি নামের ওই শিক্ষক এর আগেও তদন্ত রিপোর্ট পত্রিকার ধর্মপাশা প্রতিনিধিকে অনুরোধসহ ভয়ভীতি দেখান বলে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহকৃত রয়েছে।
প্রতিবেদন প্রস্তুতকালে একই তারিখে ৬টা ৪৭ মিনিটে শিক্ষক ওলি অন্য আরেকটি নাম্বার ০১৮১৯ ____৮৭২ হতে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এর নাম্বারে পূনরায় ফোন দিয়ে প্রথমে বুঝিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালান কিন্তু ব্যর্থ হয়ে খুব অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন এবং তার বিরুদ্ধে রিপোর্ট হলে তিনি দেখে নিবেন বলে হুমকি-ধমকিদেন যার রেকর্ড সংগ্রহকৃত। একজন শিক্ষক এর মুখের ভাষা যে কতটা খারাপ হতে পারে আমাদের মাল্টিমিডিয়া পেইজে সেই কল রেকর্ড আপলোড করা হলে শুনলে বুঝতে পারবেন।
এসব বিষয়ে পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল জানান- ইউপি সদস্য জিয়ার আচরণ ও ভাবভঙ্গিতে মনে সে চেয়ারম্যান আসলে সত্যি সে ইয়াবা ও মাদকাসক্ত নিশ্চিত করে তিনি বলেন আমিও এ ভিডিও দেখছি।
এসব বিষয়ে ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন- মাদক যেই সেবন করুক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসব বিষয়ে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গিয়াস উদ্দিন বলেন – আমি পুলিশকে বলে দিচ্ছি ভিডিও দেখে ব্যবস্তা নেওয়ার জন্য।
এসব বিষয়ে পাইকুরাটি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম জানান- আমাদের না জানিয়ে গোপনে জুয়ারি ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাই এদের অপকর্মের কোন দায়বদ্ধতা আমাদের উপর নেই।
এসব বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক শাহ আলম মুঠোফোনে বলেন, খুব দ্রুতই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply