বিছনাকান্দি সীমান্তে চোরাচালানের নেপথ্য তিন কুতুবের মাফিয়া গ্যাং | সাপ্তাহিক তদন্ত রিপোর্ট

রবিবার, ০৬ Jul ২০২৫, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
বিছনাকান্দি সীমান্তে চোরাচালানের নেপথ্য তিন কুতুবের মাফিয়া গ্যাং সিলেটে নিজ বাড়িতে রাজার হালে ডেভিল কামরান ২৩টি সোনার বারসহ দুই চোরাকারবারি আটক গোয়াইনঘাটে দুই পুলিশের তত্বাবধানে চলছে চোরাচালান জকিগঞ্জে প্রবাসীর বাড়িতে গভীর রাতে পুলিশী হয়রানির অভিযোগ সুরমায় বালু উত্তোলনের তান্ডবে ধ্বংস বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ সিলেটে সেনা অভিযানে অস্তিত্ব সংকটে চোরাই রাজ্য, হাল ধরেছে টেটু সুমন! একাধিক পত্রিকার ভূয়া পরিচয়ধারী মমিন আনসারীর তান্ডবে গনমাধ্যম প্রশ্নবিদ্ধ! দুই কিশোরী নিখোঁজে সাংবাদিক জামালকে ফাঁসানোর চেষ্টা: তদন্ত রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের নিন্দা গোলাপগঞ্জে বখাটের নির্যাতনে তরুণীর পড়ালেখা বন্ধ
বিছনাকান্দি সীমান্তে চোরাচালানের নেপথ্য তিন কুতুবের মাফিয়া গ্যাং

বিছনাকান্দি সীমান্তে চোরাচালানের নেপথ্য তিন কুতুবের মাফিয়া গ্যাং

নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেটের গোয়াইনঘাট প্রশাসন কর্তৃক চোরাচালান প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স ঘোষণার উপর বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে সীমান্ত চোরাচালান আমদানি ও পাচার করে আসছে তিন কুতুবের মাফিয়া গ্যাং।

জনশ্রুতি আছে, গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় অবৈধ পণ্য দেশে পাচার করে কোটি কোটি আয় করে অল্প দিনেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন সীমান্ত এলাকার অনেকেই। যাদের নূন আনতে পান্তা ফুরাতো, তারাও এখন কোটিপতি বনে গেছেন মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে।

স্থানীয়রা জানান, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের পর ওই রুটে নেতৃত্বের পরিবর্তন এসেছে। আওয়ামী পন্স্থী বা তাদের আশির্বাদুষ্ট আত্মগোপনে থাকার কারণে বর্তমান লাইন চালাচ্ছেন পশ্চিম উপরগ্রামের গোলাম হোসেন(৪৩), লামনী গ্রামের আব্দুল খালিক(৪০) ও বর্তমান ইউনিয়ন সদস্য ইমাম মেম্বার। ৫ আগস্টের পর থেকে তারাই চোরাকারবারীদের সাথে যোগাযোগ করে গড়ে তুলেছেন ভারত-বাংলাদেশ নিরাপদ রুট। তাদের নেতৃত্বে প্রতিদিনই উপজেলার সীমান্তের বিছনাকান্দি, দমদমী, পান্তুমাই ও লক্ষণ ছড়া সীমান্ত দিয়ে দেশে ঢুকছে কোটি কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে চিনি, পিয়াজ, অস্ত্র, মাদক, বিভিন্ন ব্রান্ডের স্মার্ট ফোন ও মোটরসাইকেল। পণ্য ছাড়াও বিভিন্ন সময় গরু-মহিষের বড় চালানও তারা দেশে আনেন।

আর এ থেকে প্রতিমাসের বখরা হিসেবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে মোটা অঙ্কের টাকাও প্রদান করেন এই তিন দরবেশ। ৫ আগস্টের আগেও তারা লাইনে ছিলেন, তবে নেতৃত্বে ছিল আওয়ামী ডেভিল।

ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা জানান, চোরাকারবারী প্রতিরোধের চেয়ে তাদের বেশিই সহযোগিতা দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। চোরাচালান প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা শুধু নামমাত্র। বাস্তবে এর কোনো প্রতিকার ভোগ করেননি জনগণ।

তারা বলেন, চোরাই পথে আসা এসকল পণ্যের সরকারি কোনো বৈধতা না থাকলেও স্থানীয় পুলিশের নিজেদের ফোর্স ও স্থানীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে চোরাইপথে আসা ভারতীয় পণ্যের উপর দৈনিক কোটি কোটি টাকার চাঁদা আদায় করছেন এই তিন কুতুব। মূলত, তাদের ইশারাই চলছে এই ভারতীয় চোরাচালানের অবৈধ রমরমা উৎসব।

সূত্র জানায়, ভারতীয় গরু হাওর অঞ্চল লামনী, পাতলী কোনা, পশ্চিম উপরগ্রাম পশ্চিম হাদারপার হয়ে তোয়াকুল বাজারের রশিদ দিয়ে যাচ্ছে দেশের সর্বপ্রান্তে। প্রতিটি গরু থেকে নেওয়া হচ্ছে ১২০০ টাকা করে। প্রতিদিন আসা ২/৩ হাজার গরুর বিপরীতে আদায় হচ্ছে প্রায় ৩৬ হাজার টাকা। অথচ, এসব টাকার রাজস্ব থেকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমে জানান- সীমান্ত চোরাচালান ঠেকানো পুলিশের কাজ নয়। উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে দেদারসে ভারতীয় পণ্য এবং মাদক ঢুকছে স্বীকার করেও তিনি গণমাধ্যমে বলেন- জরুরি হয়ে গেছে ওই এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ। পুলিশের নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন- চোরাচালান পরিবহন বন্ধে সড়কে পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছে। কোয়ারি থেকে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকার কারণে অনেকে চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছে বলে স্বীকার করেন পুলিশ সুপার।

তিনি বলেন- গোটা জেলায় প্রায় সব পুলিশ নতুন। এসপি অফিসে খাতাপত্রও নতুন। এ অবস্থায় কাজ বুঝে নবাগত পুলিশ সদস্যরা অল্পদিনের মধ্যেই অপরাধ বন্ধে তৎপর বলে দাবি করেন তিনি। চোরাচালান বিষয়ে এসপি’র মূল্যায়ন হচ্ছে একটি চক্র বংশপরম্পরায় সীমান্তে এ অপরাধ অব্যাহত রেখেছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে অপরাধ বা পাপবোধ নেই।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo
error: Content is protected !!