ব্রহ্মপুত্রে ভাঙনে বিলীন বিদ্যালয়: টিনের এক ঘরে চলছে ছয় শ্রেণির ক্লাস | সাপ্তাহিক তদন্ত রিপোর্ট

শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
ভাঙ্গুড়ায় অনৈতিক ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ: প্রভাবশালীরা ছাড়া, গরিব নারী আটক এবং জেল হাজতে প্রেরণ। ব্রহ্মপুত্রে ভাঙনে বিলীন বিদ্যালয়: টিনের এক ঘরে চলছে ছয় শ্রেণির ক্লাস সিলেটে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও টিলা কাটছেন শাবিপ্রবির কর্মচারী করিম রৌমারীতে পরকীয়া করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক ২ সন্তানের জনক/জননী ভাঙ্গুড়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল উদ্ধার, নিলামে বিক্রয় প্রেসক্লাব পাবনার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শফিক গ্রুপের চেয়ারম্যানের মতবিনিময় রৌমারীতে জামালপুর ব্যাটালিয়নের (৩৫ বিজিবি) অভিযানে আসামীবিহীন ভারতীয় মদ- ৯ বোতল এবং ১৩৫০০ টাকা ভারতীয় ঔষধসহ আটক। রাস্তার পাশের গাছ কেটে বসানো হচ্ছে পাইপ রৌমারীতে জামালপুর ব্যাটালিয়নের (৩৫ বিজিবি) অভিযানে আসামীসহ মাদকদ্রব্য আটক করা প্রসঙ্গে নাসিরনগরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মারজান খানের শুভেচ্ছা
ব্রহ্মপুত্রে ভাঙনে বিলীন বিদ্যালয়: টিনের এক ঘরে চলছে ছয় শ্রেণির ক্লাস

ব্রহ্মপুত্রে ভাঙনে বিলীন বিদ্যালয়: টিনের এক ঘরে চলছে ছয় শ্রেণির ক্লাস

Manual2 Ad Code

আসাদুজ্জামান,প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম:

Manual5 Ad Code

ব্রহ্মপুত্র নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পর এক ঘরে ছয়টি শ্রেণি নিয়ে ধুকেধুকে চলছে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের চরাইহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৮ মাস আগে ভাঙনে ভিটে হারানোর পর এখন একটিমাত্র টিনের ছাপড়া ঘরেই পরিচালিত হচ্ছে ছয়টি শ্রেণির ক্লাস। একটি মাত্র শ্রেণীকক্ষে টেবিল-চেয়ার বা পাঠ্যউপকরণ রাখার স্থায়ী ব্যবস্থা না থাকায় কার্যত পাঠদান কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে রোববার রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, দরজা-জানালা বিহীন চরাইহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি একজন পল্লী চিকিৎসকের বাড়ির উঠানে অবস্থিত। স্কুলের অবকাঠামো নেই। কয়েকটি টিন দিয়ে একটি একচালা ছাউনি দিয়ে ছাপড়া ঘর তৈরি করা হয়েছে। সেখানে কয়েকটি শিক্ষার্থী বসার কয়েকটি ব্রেঞ্চ থাকলেও শিক্ষকদের বসার কোন জায়গা নেই। বিদ্যালয়ের পাশের একটি জুতার দোকানে টেবিল নিয়ে বসে প্রধান শিক্ষককে দাপ্তরিক কাজ করতে দেখা যায়।
এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৮ মাস আগে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিদ্যালয়টি তাঁর স্থায়ী ভিটা হারায়। এরপর বিদ্যালয়ের নিজস্ব কোন জায়গা না থাকায় এবং সরকার থেকে কোথাও বিদ্যালয়ের জন্য জমি বরাদ্দ না দেওয়ায় একজন পল্লী চিকিৎসকের বাসার উঠানে একটি একচালা ঘর করে ক্লাস কার্যক্রম চলছে। একটিমাত্র টিনের চালার ঘরে চলছে ৬ শ্রেণির ‘যুদ্ধ’। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ১২০ জন।
নদী ভাঙনের পর নিজ বাড়ির উঠানে বিদ্যালয়ের একটি ঘর করতে দিয়েছেন পল্লী চিকিৎসক জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয় ভেঙে গেলে বাড়ির আঙিনায় যতটুকু জায়গা ছিল, সেখানে একটি ঘর তোলার জায়গা দিয়েছি। একটি ছাপড়া ঘরে সকল শ্রেণীর ক্লাস হচ্ছে। এদিকে আমার নিজের থাকার জায়গা সংকট। কিন্তু চলে যাইতেও কইতে পারি না। কবে যে স্কুলের নামে জমি হইবো আল্লাহ জানে।’
অফিস কক্ষ না থাকায় বিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কাজকর্ম ও নথিপত্র স্থানীয় একটি জুতার দোকানে রাখা হচ্ছে। জুতা ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের কক্ষ না থাকায় প্রায় সময় দেখি স্যাররা বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন। বৃষ্টি আসলে আমার দোকানের বাড়ান্দায় এসে দাড়ান। শিক্ষক মানুষ, অথচ বসবার জায়গা নাই। তাই আমি আমার দোকানে বসে কাজ করতে দিয়েছি। আমার জুতার দোকানেই বিদ্যালয়ের নথিপত্রের একটি আলমারী ও হেডস্যারের বসার জায়গা করে দিয়েছি।’
প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান জানান, ‘একটি ঘরে ছয়টি শ্রেণি চালাতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। একটি শ্রেণীর ক্লাস চলার সময় অন্যান্য শ্রেণির শিশুদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। রোদ, বৃষ্টি ও গরমে তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। শিক্ষা অফিসকে অবগত করা হলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। জুতার দোকানে বসে দাপ্তরিক কাজ করতে হচ্ছে। শিক্ষক হিসাবে এটা আমাদের জন্যও বিব্রতকর।’
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফা আক্তার বলেন, একটি রুমে সবার জায়গা হয় না। বৃষ্টি হলে বাইরে দাঁড়িয়ে ভিজে যাই। ফ্যানও নেই, খেলাধুলার মতো মাঠও নেই। আমাদের স্কুল কবে ঠিক হবে?
অভিভাবক শফিকুল বলেন, ‘অন্য স্কুলের শিশুরা নিয়মিত পড়াশোনা করে বৃত্তির সুযোগ পাচ্ছে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা ঠিকমত ক্লাস করার সুযোগ না পেয়ে পিছিয়ে পড়ছে।’
রাজিবপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘নদীভাঙনের পর জায়গা না থাকায় কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। ওই এলাকার কেউ যদি জমি দান করলে, দ্রুত নতুন স্কুল নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে এলাহী বলেন, ‘বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পর নতুন জায়গা পাওয়া যায়নি। আমি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথেও কথা বলেছি। কিন্তু কেউ জমি দিতে রাজী হচ্ছে না। এখন জমি অধিগ্রহণ করে তারপর বিদ্যালয় করা হবে।’
আসাদুজ্জামান,জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম
০১৭১৮৬৮৫৪০৮

Manual3 Ad Code

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo

Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code
error: Content is protected !!