তদন্ত রিপোর্ট ডেস্ক: সাবেক স্ত্রীর মামলায় পলাতক রয়েছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ‘বিয়ে পাগলা’ আমিনুর রহমান। তিনি সিলেট নগরীর আম্বরখানা বড়বাজার এলাকার লৎফুর রহমানের ছেলে। প্রথম বিয়ের তথ্য গোপন রেখে ফের বিয়ে, স্ত্রীকে ভরণ-পোষণ না দেয়া ও তালাকের পরও দেনমোহরের টাকা পরিষোধ না করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সিলেটের সিনিয়র জজ ও পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী। মামলা নম্বর-২২১/২০১৯।
আদালতের বিচারক শুনানী শেষে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বিগত ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ২৪ অক্টোবর বাদীর দেনমোহরের সমুদয় টাকা ও ভরণপোষণ বাবত ৩৬ মাসের টাকা পরিষোধের নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে আদালতের রায় অনুসারে উল্লেখিত টাকা পরিষোধ না করায় যুক্তরাজ্য প্রবাসী আমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারি করেছেন। গ্রেফতারী পরওয়ানা জারির পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
পলাতক থাকার বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান। সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি জানিয়েছেন, দেশে আসার সংবাদ পাওয়া মাত্রই তাকে গ্রেফতার করা হবে।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আমিনুর রহমানের সাথে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে পারিবারিক ভাবে দক্ষিণ সুরমার তেলিরাই নিবাসী কাজী নওসরের মেয়ে তাহেরা নওসরের বিয়ে হয়। বিয়ের পর প্রথম এক বছর তাদের সংসার মুটামুটি ভালোভাবেই কাটছিলো। বছরখানেক পর থেকেই বিভিন্ন অযুহাতে শশুর বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা এনে দেয়ার জন্য স্ত্রীকে চাপ দিতে শুরু করেন আমিনুর। অব্যাহত চাপের কারণে একাধিকবার টাকা দিতে বাধ্য হন ভুক্তভোগী। সর্বশেষ তার কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবী করলে তা দিতে অস¦ীকৃতি জানান তিনি। এরপর থেকেই সংসারে আশন্তি দেখা দেয়। এক পর্যায়ে স্ত্রীর সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেন আমিনুর।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, বিয়ের পর তিনি জানতে পেরেছেন তার আগেও আমিনুর রহমান আরেকটি বিয়ে করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন মেয়ের সাথে রয়েছে তার অবৈধ সম্পর্ক। এসব বিষয় নিয়ে প্রায়ই সংসারে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। তারপরও সংসার টিকিয়ে রাখতে সবকিছু মেনে নিয়েছিলেন তিনি। এতোকিছুর পরও সংসার ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।
বাদী জানান, ‘আমিনুর রহমান একজন ‘বিয়ে পাগলা’। তার সাথে বিয়ের আগেই তিনি লিনা নামের এক ভারতীয় নারীকে প্রথমে বিয়ে করেছেন। সেই বিয়ের তথ্য গোপন রেখে আমাকে বিয়ে করেন। তারপর আমার সাথে তালাক হওয়ার আগেই রুবি নামের আরেক নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন। সর্বশেষে শারমিন নামের আরেক নারীকে বিয়ে করেছেন বলে জানতে পেরেছি।
এ বিষয়ে জানতে আমিনুর রহমানের যুক্তরাজ্যের মোবাইল নম্বরে কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমিনুর রহমানকে গ্রেফতারে আমাদের চেস্টা অব্যাহত আছে, তিনি বিদেশে পলাতক থাকায় আমরা তাকে ধরতে পারছি না। যখনই দেশে আসবেন আমরা তাকে অবশ্যই গ্রেফতার করবো।
Leave a Reply