জাহাঙ্গীর আলম মেহেদী: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শেরপুর নিজগাঁও মৌজার বালু মহাল পিয়াইন নদী এবং ছোট সাতকিলা, বড় সাতকিলা, গোয়াপাকুরা ও ঝলকপুঞ্জ জলমহাল ১৪৩১ বাংলা সনের জন্য ইজারা নিয়ে ছাতক ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আরও বেশ কয়েকটি বালু মহলে লুটপাট করেছে বড় একটি চক্র।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শিমুলতলা মৌজা ও ছাতক উপজেলার রাজেন্দ্রপুর মৌজার বাহাদুরপুর, বাইরং নদী ও চলিতার ঢালা বালু মহাল লুটপাট করে শত কোটি টাকার উপরে আত্মসাৎ করেছে এই চক্রটি। এতে হুমকির মধ্যে পড়েছে সরকারি কয়েকশো একর ভূমি ও কৃষি জমি।
স্থানীয় জমির কৃষকরা অভিযোগ করলে তাদেরকে মারধরসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয় বলে জানিয়েছেন। এসব মিথ্যা মামলা আদলতে এখনো চলমান রয়েছে। ইজারার জায়গা রেখে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ড্রেজিং করে শত কোটি টাকার উপর বালু পাথর উত্তোলন করার কারণে সরকার শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এছাড়া ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর মৌজায় রেলওয়ে রোপওয়ে পাশ্ববর্তী ৩টি মৌজায় মিলে বৃহৎ বনাঞ্চল ড্রেজিং মেশিন দিয়ে উজাড় করে দেওয়া হয়েছে। সরজমিনে গিয়ে এসব অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে।
জানা গেছে, এর মধ্যে ফরেস্ট ল্যান্ডের প্রায় ৬ হাজার ১শত ৪১একর ভূমি রয়েছে। চেলা নদীর উভয় তীরে সব জায়গাগুলোতে মুর্তাবাগান, কৃষি জমিগুলোকে ধংস করে বিগত বর্ষা মৌসুমে আমবাড়ি’র তৈয়মুছ আলীর পুত্র সুজন মিয়া, গণেশ পুর গ্রামের বুলবুল মিয়া, বাগবাড়ি গ্রামের রাসেল চৌধুরী, চাটিবহর গ্রামের কিতাব উদ্দিন, ময়না মিয়া গংদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বউখালের পার গ্রামের আকদ্দছ আলী।
একই বালুচক্রের বিরুদ্ধে ছাতক থানা, কোম্পানীগঞ্জ থানা, ছাতক নৌ পুলিশ ফাঁড়ি, জেলা ফরেস্ট বিট কর্মকর্তা, ছাতক সহকারী পুলিশ কমিশনার, ছাতক সরকারি কমিশনার ভূমি, পুলিশ সুপার গোয়াইনঘাট সার্কেল, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করা হয়েছে কিন্তু দৃশ্যমান তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানা গেছে।
বিগত পাঁচ মাসে রাতের অন্ধকারে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে শত শত বোমা মেশিন লাগিয়ে প্রায় ১২ কোটি গণ ফুট বালু ও মাঠি উত্তোলন করে বিক্রি করেছে। যাহার আনুমানিক মূল্য শত কোটি টাকার উপরে। এতে করে দেশের সম্পদ ধ্বংসের মুখে পড়েছে তেমনি ভাবে চেঁলা নদীর গর্ভে জমিগুলো বিলীন হয়ে গেছে। বিভিন্ন দিকে নদীর বড় বড় নালা তৈরী হওয়ার কারণে ফরেস্ট ল্যান্ডের জমিগুলো ধ্বংসের দিকে ঢলে পড়ছে।
ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান এডভোকেট সুফি আলম সোহেল বলেন, চেঁলা নদীর তীরে শতশত বোমা মেশিন লাগিয়ে অবৈধভাবে যে অর্থ উপার্জন করেছে, এই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হোক এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান তিনি।
Leave a Reply