সিলেটে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে ছাড়াতে বাদির চুক্তি ৩ লাখ, আদালতপাড়ায় কানাঘুষা | তদন্ত রিপোর্ট

সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টে চলছে ব্ল্যাক টিকেট বাণিজ্য সিলেটে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে ছাড়াতে বাদির চুক্তি ৩ লাখ, আদালতপাড়ায় কানাঘুষা ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ অবজ্ঞা করছে স্বাস্থ্য পরিচালকের নোটিশ, লাপাত্তা রুবেল-সামছু গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান, সেবাগ্রহীতারা সমস্যায় আ.লীগের পরিবর্তনে টালমাটাল দারোগা ইবায়দুল্লাহ পিরের বাজারের দুই কিশোরীকে দিয়ে কক্সবাজারে দেহ ব্যবসা: জড়িত মা-ছেলে সাত বছরে কোটিপতি আ.লীগ দোসর পলাশ, থামছেনা দৌরাত্ব! গোয়াইনঘাটে জুড়ে কাশেম-বাবলা’র রামরাজত্ব ছাতকে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলনের হিড়িক, জিম্মি আমজনতা ওসমানীনগরে লেংড়া এমরানের নেতৃত্বে কুশিয়ারার বালু লুটপাট 
সিলেটে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে ছাড়াতে বাদির চুক্তি ৩ লাখ, আদালতপাড়ায় কানাঘুষা

সিলেটে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে ছাড়াতে বাদির চুক্তি ৩ লাখ, আদালতপাড়ায় কানাঘুষা

তদন্ত রিপোর্ট ডেস্ক: সিলেটে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে এফিডেভিট দিয়ে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন বলে মামলার বাদির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও একই মামলায় ওই বাদি (হলফনামা) এফিডেভিট মাধ্যমে আরো দু’জনকে আদালত মাধ্যমে ছাড়িয়ে আনেন।

বিগত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় এই মামলা করেন দক্ষিণ সুরমার নোয়াগাও গ্রামের মো. খলিল মিয়ার ছেলে তুরন মিয়া (৪৭)। তিনি নগরীর শুকরিয়া মার্কেটের একটি দোকানের কর্মচারি। গেলো বছরের ১৩ ডিসেম্বর তিনি এসএমপির কোতোয়ালি থানায় বিস্ফোরণ ও অস্ত্র আইনে এই মামলা করেন। মামলা নং-২৬/৫৬৩।

তার এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার জড়িত মামলার ৩৫ নাম্বার আসামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহরিয়ার আহমেদ রাসেল। তিনি কুচাইয়ের ৪০ নং ওয়ার্ডে (মাজারের বিপরীতে) বাসার মৃত মাহবুব মিয়ার ছেলে। গত রোববার (২০ এপ্রিল) মধ্যরাত ৩টার দিকে এসএমপির মোগলাবাজার থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

মো. তুরন মিয়া, ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে এফিডেভিট দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলের পক্ষে আদালতে গিয়ে সাফাই গাইবেন। গত বৃহস্পতিবার তুরন মিয়া ও আসামী পক্ষের লোকজন গিয়েছিলেন (হলফনামা) এফিডেভিট করার জন্য আদালত প্রাঙ্গণে। বিষয়টি জানাজানি হলে, এ নিয়ে আদালত পাড়ায় চলে কানাঘুষা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে বাদি মো. তুরন মিয়া ও আসামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলকে নিয়ে নেটিজেনরা ‘মামলা বানিজ্য’ বলে পোস্ট দেন। এছাড়াও নেটিজনেরা বলেন, (হলফনামা) এফিডেভিট মাধ্যমে এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার বাদিরা টাকার জন্য আদালতকেই বেছে নিয়েছেন। এতে করে আদালতের প্রতি সাধারণ মানুষ আস্থা হাড়াচ্ছে!

এদিকে আদালতের একটি সূত্র গণমাধ্যমে জানিয়েছে, ‘মামলা বানিজ্য’ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার মামলার বাদিরা এফিডেভিট মাধ্যমে আসামিকে ছাড়িয়ে আনতে যে সকল বাদিরা একের অধিক এফিডেবিট করছেন, তাদেরকে নজরদারিতে রেখেছে আদালত। এবার তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিবে আদালত।

সূত্রটি আরো (হলফনামা) এফিডেভিট হলে আগামী ২৭ এপ্রিল রোববার আদালতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলে পক্ষের আইনজীবিরা তার জামিনের জন্য আবেদন করবেন।

শাহরিয়ার আহমেদ রাসেল দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এবং সাবেক এমপি হাবিবুর রহমানের হাবিবের অনুসারী। সরকার পতনের পরপরই নিজের লেবাস পাল্টাছেন তিনি। কিন্তু কোনোভাবেই নিজেকে রেহাই করতে পারেন নি। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় অস্ত্র মামলাসহ একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতে তার বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র মজুদের গুঞ্জন রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনকে ইস্যু করে ৫ আগস্টের পর সিলেটে অসংখ্য মামলা করেছেন বিএনপি জামায়াত নেতাসহ আহতরা। এসব মামলার অনেক বাদি গ্রেফতার হওয়া আসামিদের ছাড়াতে আসামি পক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্গের টাকার বিনিময়ে বাদি নিজে (হলফনামা) এফিডেভিট নিয়ে আদালতে হাজির হচ্ছেন।

গত বুধবার চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের ঘটনায় করা এমনই এক মামলায় আসামি জড়িত নয় বলে হলফনামা (এফিডেভিট) দেন এক বাদি। পরে নিজে আদালতে হাজির হয়ে জামিনে আপত্তি নেই জানান। আসামি করেও আবার জামিন চাওয়ার এ ঘটনায় পরে বাদি এবং আসামি দু’জনকেই জেলে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদাল। চট্টগ্রামে ঘটা এ ঘটনা ফলাও করে প্রকাশ করে প্রথম আলো পত্রিকা।

অপরদিকে, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে বলেছেন, বিএনপি কিংবা সহোযোগী সংগঠনের কোনো নেতা বা কর্মী যদি কাউকে এমনভাবে এফিডেভিট দেয়ার ঘটনার খবর মিলে তাহলে দেশের যেকোনো আদালতে বাদি এবং আসামি উভয়ের বিপক্ষে যেনো দলীয় আইনজীবীরা আদালতে হাজির হয়ে উভয়ের বিরোধিতা করে জামিন না মঞ্জুরে ভূমিকা রাখেন।

এবিষয়ে মামলার বাদি তুরন মিয়া গণমাধ্যমে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিতো সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি কেনো স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলের পক্ষে আদালতে গিয়ে সাফাই গাইবো। আমার সাথে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেলের ভাই সুহেলসহ অনেকেই যোগাযোগ করেছেন। আমাকে টাকারও প্রলোভন দিয়েছেন। আমি তাদের সাফ না করে দিয়েছি। আদালত প্রাঙ্গনে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি আমার ব্যক্তিগত কাজে গিয়েছিলাম।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo
error: Content is protected !!