❛বালাগঞ্জে ৬৮৮জন শিক্ষার্থী বিপরীতে ৭ শিক্ষক❜ | তদন্ত রিপোর্ট

বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
বাগমারা গণিপুরে অধ্যাপক কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ৩১ দফা গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ নাচোলে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০, থমথমে পরিস্থিতি এলাকায়। সিলেট নগরীর আম্বরখানায় যুক্তরাজ্য প্রবাসীর দোকান কোঠা আত্মসাতে ১ জন গ্রেফতার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৩ বিজিবির  সাথে সাংবাদিকের মত বিনিময় সভা রৌমারীতে জামালপুর ব্যাটালিয়নের (৩৫ বিজিবি) অভিযানে আসামীসহ ভারতীয় মদ ও ঔষধ আটক করা প্রসঙ্গে। রেললাইনে পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়া আগাছা নয় আমরুল গাছ শত রোগের মহা ঔষুধ দারিদ্র্য জয় করে রাস্তায় ঘাম ঝরানো নারীর সাহস—অটোভ্যান চালিয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন সুলতানা! রৌমারীতে ইয়াবা-হেরোইনসহ মাদক সম্রাট নুর আলম আটক সিরাজদিখানে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
❛বালাগঞ্জে ৬৮৮জন শিক্ষার্থী বিপরীতে ৭ শিক্ষক❜

❛বালাগঞ্জে ৬৮৮জন শিক্ষার্থী বিপরীতে ৭ শিক্ষক❜

Manual6 Ad Code

বালাগঞ্জ সংবাদদাতা: শিক্ষক সংকটে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার একমাত্র সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বালাগঞ্জ সরকারি দ্বারকানাথ (ডিএন) উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এতে হারাচ্ছে প্রায় শত বৎসরের গৌরব, বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক সংকটে বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যহত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকেরাও। এ সংকট কবে নাগাদ দূর হবে তা বলতে পারছেন না বিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনীয় জনবল সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে শত বৎসরের পুরনো প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা ব্যবস্থা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৪৬সালে প্রতিষ্ঠিত এশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণের পরবর্তী সময়ে ২০১৮সালে সরকারের অনুকূলে বিষয়-সম্পত্তি বিধি মোতাবেক হস্তান্তর করা হয়। উপজেলার একমাত্র সরকারি বিদ্যালয় হওয়ার শিক্ষার্থী সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এতে প্রতিটি শ্রেণিকে দু’টি শাখায় বিভক্ত করে পাঠদান চালাতে হয়। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ৬৮৮জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। ২৬টি শিক্ষক পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৭জন। প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় ভারপ্রাপ্ত দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে, বিগতদিনে এঅঞ্চলে শিক্ষার দ্যুতি ছড়ানো এশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া, জনবল সংকটে মুখ থুবড়ে পড়া এবিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরীর পদটি শুন্য থাকায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়ের স্থাপনা ও মূল্যবান কাগজপত্র। অন্যান্য বা সহায়ক ৫টি পদের মধ্যে আছেন ১ জন। এর মধ্যে অফিস সহকারী, দপ্তরি, নৈশ প্রহরী ও আয়ার পদটি শূন্য। এদিকে, দুর্বল প্রশাসনিক ব্যবস্থার কারণে বিদ্যালয়ের আশেপাশে বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত। নানা সময়ে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে ঘটছে অনাকাঙ্কিত ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে চলা বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের পর থেকেই শিক্ষার মান ক্রমান্বয়ে খুবই নিম্নমুখি হচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবক ও স্থানীয়দের।

Manual8 Ad Code

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, স্কুলটি বাঁচান,রক্ষা করেন, শিক্ষক সংকটে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপন্ন হয়ে যাবে। স্কুলটি এভাবে চলতে পারে না। যে শিক্ষকরা কর্মরত রয়েছেন তাদেরও অনেক বয়স হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার অনিশ্চিত।

ম আ মুহিত নামের এক অভিভাবক তার ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, বড় আশা নিয়ে সরকারি স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করিয়েছি। শিক্ষক সংকটের ফলে ছেলের মানসম্মত পড়ালেখা নিয়ে গভীর শঙ্কার মধ্যে আছি। বড় লোকেরা তো প্রাইভেট স্কুলে পড়াতে পারে। আমাদের মতো নিম্ন-মধ্যবিত্তদের তো সেই সামর্থ্য নেই। মাসুক মিয়া নামের এক অভিভাবক বলেন, বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি শিক্ষার্থীদের জন্য তা মোটেই সুখকর নয়। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ পড়ালেখা নিয়ে অভিভাবকরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে আছেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে শিক্ষকদের শূন্যপদ থাকায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে গিয়েও কোন সুফল পাচ্ছেন না। বাড়ছে শিশোর গ্যাংয়ের প্রভাব।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নবম ও দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে আলাপ হলে তারা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়টি বালাগঞ্জের মধ্যে একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান। সরকারি বিদ্যালয়ে ভালো ও পর্যাপ্ত পরিমানের শিক্ষক থাকে। নিয়মিত পাঠদান ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা ব্যবস্থার সুবিধা থাকে। যা আমাদের বিদ্যালয়ে নেই। ১২ মাসের মধ্যে ৪ থেকে ৫ মাস বিভিন্ন কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকে। বাকি সময় শিক্ষক সংকটে নিয়মিত ক্লাসও হয় না। বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের নিকট জোড় দাবি জানাচ্ছি।

Manual4 Ad Code

বিদ্যালয়ের প্রাক্তণ ছাত্র বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় পিএইচডি গবেষক রুমেল আহমদ, মাহফুজুর রহমান হিমেল, ডা. দেবব্রতরাজ উৎস, ডা. তুহিন আহমদ বলেন, আমাদের সময় বিদ্যালয়টির সোনালি যুগ ছিল। পার্শ্ববর্তী অন্যান্য উপজেলার স্কুলের চেয়ে এই স্কুলের পড়ালেখা ও ফলাফল অনেক ভালো ছিল। যুগ এবং সময়ের সাথে অনেক কিছুই পাল্টেছে, পরিবর্তন এসেছে শিক্ষা ব্যবস্থায় কিন্তু অত্র এলাকার একটি স্বনামধন্য বিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষক শিক্ষার্থী অসমানুপাত, যথেষ্ট পরিমাণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও শিক্ষকের অভাবের কারণে আজ এই বিদ্যালয়টি যেনো একযুগ পিছিয়ে রয়েছে!

উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার আতিকা আফরোজ বলেন, শিক্ষক সংকটে এতো পুরনো একটি স্কুলের এই অবস্থা খুবই সত্যিই দু:খজনক। কিন্তু জাতীয়করণের পর শিক্ষক নিয়োগ আমাদের হাতে থাকে না। আমরা লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের পর থেকেই আমরা শিক্ষকশূন্যতায় ভুগছি। প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষক না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিকভাবে পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষকের চাহিদা দিয়ে ইতোমধ্যেই আমাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। ৭ জন শিক্ষক দিয়ে এতো বড় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা খুবই কষ্টকর।

Manual4 Ad Code

এপ্রসঙ্গে উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত কুমার চন্দ বলেন, শিক্ষক চাহিদার বিষয় উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. নুরের জামান চৌধুরী বলেন, ইউএনও আমাকে লিখিত জানিয়েছেন। শিক্ষক সংকটের কথা জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।

Manual5 Ad Code

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo

Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code
error: Content is protected !!