রেললাইনে পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়া | তদন্ত রিপোর্ট

রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
মোহনগঞ্জ বাজারের সুইচগেট মোড়ে নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনা—দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি এলাকাবাসীর সিলেটে ১৩ কোটি টাকার বালু ৩৮ লাখে বিক্রি জাফলং এএসআই রেজওয়ানকে ম্যানেজ করে বালু-পাথর হরিলুট রৌমারীতে লকডাউন বিরোধী কর্মকাণ্ডে তিনজন গ্রেফতার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে গান পাউডার ও ককটেল তৈরীর সরঞ্জামাদি সহ আটক ১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ (নাচোল-গোমস্তাপুর- ভোলাহাট) আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন পেলেন আমিনুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠিত নাচোলে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস-২০২৫ উদযাপন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ভাঙ্গুড়ায় হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক, পুলিশের উদাসীনতার অভিযোগ ভাঙ্গুড়ায় জরিনা রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ
রেললাইনে পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়া

রেললাইনে পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়া

Manual1 Ad Code

রাজশাহীর জেলা প্রতিনিধি

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগ টেন্ডার ও ঠিকাদার নিয়োগ ছাড়াই রাজশাহীর রেললাইনে পাথর ফেলেছে এমন অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়ারও দেখা মিলেছে কোথাও কোথাও। রাজশাহী থেকে আব্দুলপুর ৫০ কিলোমিটার লাইনে ফেলা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯০ ঘনমিটার বা ৪০ হাজার সিএফটি পাথর। এতে রেল চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

রেলওয়ে সদর দপ্তর দাবি করেছে, তারা এ বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানত না। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, রেললাইনে শুধুমাত্র পাথর দেওয়া হয়। ইটের খোয়া দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

সূত্র জানায়, গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রেলপথের বিভিন্ন স্থানে এসব পাথর ফেলা হয়। স্থানীয়রা জানান, নতুন পাথরগুলোর সঙ্গে ছিল মাটি ও ধুলো। বৃষ্টির পর ধুয়ে গেলে পাথরের মাঝে ইটের লাল খোয়া স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

রাজশাহীর নতুন বুধপাড়া থেকে হাজরাপুকুর পর্যন্ত রেললাইনের বিভিন্ন স্থানে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে পুরো পথজুড়ে নয়, যেসব জায়গায় পাথরের ঘাটতি ছিল, কেবল সেসব স্থানে নতুন পাথর দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় এক বসবাসকারী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে আমরা রেললাইনের পাশে বসবাস করি। অনেক আগে রেললাইনে ইটের খোয়া দেওয়া ছিল। কমপক্ষে ২০ বছর আগে সেগুলো তুলে নতুন করে পাথর দেওয়া হয়েছে। সেইবার কাঠের স্লিপার পরিবর্তন করা হয়। এরপরে দেওয়া হয় লোহার স্লিপার। সেই থেকে ইটের খোয়া তুলে দেওয়া হয়। আর কখনও ইটের খোয়া দেয়া হয়নি রেললাইনে। কিছুদিন আগে পাথর ফেলে গেছে। সেই পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়া রয়েছে। এছাড়া মাটিযুক্ত পাথর দেওয়া হয়েছে। পাথর ফেলার পরের দিন বৃষ্টির পানিতে ধূলা-মাটি ধুয়ে গেছে। এরপর থেকে ইটের খোয়াগুলো বেশি চোখে পড়ছে।

Manual2 Ad Code

অন্য এক স্থানীয় বলেন, পাথরের অভাবে এখন স্লিপারগুলো খালি দেখা যায়

রেলওয়ে সদর দপ্তর দাবি করেছে, তারা এ বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানত না। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, রেললাইনে শুধুমাত্র পাথর দেওয়া হয়। ইটের খোয়া দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

সূত্র জানায়, গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রেলপথের বিভিন্ন স্থানে এসব পাথর ফেলা হয়। স্থানীয়রা জানান, নতুন পাথরগুলোর সঙ্গে ছিল মাটি ও ধুলো। বৃষ্টির পর ধুয়ে গেলে পাথরের মাঝে ইটের লাল খোয়া স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

রাজশাহীর নতুন বুধপাড়া থেকে হাজরাপুকুর পর্যন্ত রেললাইনের বিভিন্ন স্থানে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে পুরো পথজুড়ে নয়, যেসব জায়গায় পাথরের ঘাটতি ছিল, কেবল সেসব স্থানে নতুন পাথর দেওয়া হয়েছে।

অন্য এক স্থানীয় বলেন, পাথরের অভাবে এখন স্লিপারগুলো খালি দেখা যাচ্ছে। ট্রেনের সংখ্যা ও গতি দুটোই বেড়েছে। রেলপথ মেরামতে আরও মনোযোগ দেওয়া উচিত।

Manual3 Ad Code

রেলওয়ের একাধিক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রেললাইনে শুধুমাত্র পরিষ্কার ও মানসম্মত পাথর ব্যবহার হয়। ইটের খোয়া ব্যবহার নিষেধ। আমরা ছোট কর্মচারী, তাই ঊর্ধ্বতনদের কিছু বলতে পারি না। তবে তারা রেললাইন পরিদর্শনে গেলে নিশ্চয়ই বিষয়টি দেখেছেন।

Manual2 Ad Code

রেলপথে ব্যবহৃত পাথরকে ব্যালাস্ট বলা হয়। স্লিপার ও রেললাইন স্থির রাখতে এবং ট্রেনের ভার সহনীয় করার জন্য এসব পাথর ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি, ব্যালাস্ট পাথর গাছ-গাছালি গজাতে বাধা দেয় এবং বৃষ্টির পানি রোধ করে নিচের মাটি নরম হওয়া থেকে রক্ষা করে।

Manual5 Ad Code

রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর হরিয়ান স্টেশন থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন পর্যন্ত পাথর ফেলা হয়। সেই সময় ওয়েম্যানরাও উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের নির্দেশনায় পাথর দেওয়া হয়। পাথরের মধ্যে ছিল লাল রঙের ইটের খোয়া, যা দূর থেকে স্পষ্ট দেখা যায়।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজশাহী থেকে কাঁকনহাট পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রেলপথে পাথর বিছানোসহ আরও কিছু উন্নয়নকাজে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছিল।

রেলওয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ট্র্যাক) আহসান জাবিরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) ফরিদ আহমেদ বলেন, রেললাইনে ব্যালাস্ট পাথরের সঙ্গে অন্য কিছু মেশানোর কোনো সুযোগ নেই। কোথাও দায়িত্বে অবহেলা হয়ে থাকলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

সিডিআইআরের (সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ) রাজশাহী শাখার প্রধান পরামর্শক সুব্রত কুমার পাল বলেন, রেললাইনে ইট ব্যবহার করা সম্পূর্ণ অনিয়ম। ইট ক্ষয়যোগ্য, আর পাথর নয়। এতে যাত্রীদের ঝাঁকুনির মাত্রা বেড়ে যায় এবং অনেকে আতঙ্কিত বোধ করেন। এটি একটি দুর্নীতি। যারা এই কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে এমন ঘটনা বারবার ঘটবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo

Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code
error: Content is protected !!