তদন্ত রিপোর্ট প্রতিবেদক: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছানাকান্দি সীমান্তে ট্রাক্টর চালক নুরু ‘বুঙার’ আর্শীবাদে আজ কোটিপতি। নুরুজ্জামান ওরফে নুরু সে উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নের হাদারপার গ্রামের মৃত: নাসির উদ্দীন পুত্র। মূলত নুরু জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পেশাই ছিলো ট্রাক্টর চালানো।
বছরখানেক আগে উপজেলার বিছানাকান্দি সীমান্ত হয়ে চোরাই পথে আসা ভারতীয় মাদক, কাপড়, কসমেটিক, বিড়ি, চিনিসহ নানান ধরণের ভারতীয় মালামাল ট্রাক্টরে পরিবহন করত নুরু। যারা নুরুর ট্রাক্টরে এসব অবৈধ মালামাল পরিবহন করত না নুরু তাদের মালামাল ভর্তি গাড়ি ধরিয়ে দিত সিলেটের জেলা ডিবি পুলিশকে।
এ ধারাবাহিকতায় ট্রাক্টর চালক নুরুর সঙ্গে গড়ে উঠে সিলেট জেলা ডিবি পুলিশের উত্তর জোনের তাৎক্ষণিক সাবেক ওসি রেফায়েত উল্লাহর গভীর দহরমমহরম। এতেই পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি ট্রাক্টর চালক নুরুর। ট্রাক্টর চালক নুরু ডিবির সোর্স থেকে পদোন্নতি লাভ করে বনে যায় জেলা ডিবির সাবেক ওই ওসির লাইনম্যান। ডিবির ওসির লাইনম্যান পরিচয়ে বিছানাকান্দি সীমান্তে ট্রাক্টর চালক নুরু শুরু করেন একক আধিপত্য বিস্তার। সাবেক ওই ডিবির ওসির পরামর্শক্রমেই বিছানাকান্দি সীমান্তে নুরু গড়ে তোলে ডিবির লাইনের নামে একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট।
বিগত সময়ে বিছানাকান্দি সীমান্তে প্রতি রাতে ও দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্বিঘ্নে ভারত থেকে চোরাই পথে দেশে আসত ভারতীয় হরেকরকমের চোরাই মালামাল। তবে নুরুর হাতে গড়া এই চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের সদস্যের নিকট মালামাল অনুযায়ী ডিবির নামে নিদিষ্ট হারে চাঁদা দিতে হয় চোরাকারবারিদের নতুবা নুরুর ইশারায় ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব মালামাল আটক করত। তখন নুরু টাকার স্তুপে বসে ছবি ও ভিডিও করে মজা করাসহ আনন্দ ফুর্তি করত বলেও অভিযোগে প্রকাশ।
সুত্রমতে, ডিবির সাবেক ওই ওসির লাইনম্যান হিসেবে চাঁদাবাজি করে অল্প দিনেই ট্রাক্টর চালক নুরু বনে গেছে কয়েক’শ কোটি টাকার মালিক। চাঁদাবাজির টাকায় হাদারপার বাজারস্থ শাহাবুদ্দিন চেয়ারম্যানের বাড়ির সাকিনস্থ ট্রাক্টর চালক নুরু গড়ে তুলেছে বিশাল অট্রোলিকা। সেখানে পরিবারসহ বসবাসের পাশাপাশি নুরু তৈরি করেছে চোরাচালানের মালামাল থেকে ডিবির লাইনের চাঁদা আদায়ের তারজন্য নিদিষ্ট অফিসও।
নুরুর এই লাইনম্যান নামক চাঁদাবাজির সম্রাজ্যের অপরাপর সহযোগীদের মধ্যে গুরুদায়িত্বে সর্বদা নিয়োজিত হিসেবে আরোও দুই সহোদরের নাম ওঠে আসে দফায় দফায়। দুজনের একজনের নাম মোশাররফ ও আরেকজনের নাম আশরাফ। মূলত নুরু ডান হাত ও বাম হাত হিসেবে তারা দুজনই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে বলে সুত্র জানায়।
বিছানাকান্দি সিলেট সীমান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন এলাকা হওয়া স্বত্ত্বেও এখনও কোন অজানা খুঁটির জোরে নুরু কিংবা তার অপরাপর সহযোগীরা প্রশাসনের নামে প্রকাশ্যে এমন চাঁদাবাজির তান্ডব লীলা চালাচ্ছে কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হিমশিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সেলফোনে যোগাযোগ হলে ট্রাক্টর চালক নুরু সবকিছু অস্বীকার করেন।
গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সিলেট জেলা ডিবি পুলিশের উত্তর জোনের সাবেক ওসি রেফায়েত উল্লাহ অন্যত্রে বদলি হওয়ায় তার বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply