হাসিনাকে খুশি রাখতে ভয়ানক ছিলেন মোহাইমেনুর রশিদ | তদন্ত রিপোর্ট

রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
ধানখেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার  নযথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো নাচোলের রাণী ইলা মিত্রের জন্মশত বার্ষিকী এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল উপলক্ষে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের দুই নেতার শুভেচ্ছা ও প্রেরণার বার্তা “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বড়াইগ্রামে জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ” নোঙর সভাপতি অধ্যাপক হাসানুজ্জামান এর ৫৯ তম জন্মদিন পালন করলো উত্তরণ পাবনা  বড়াইগ্রামে জামায়াতে ইসলামী’র বিশাল জনসভা শুক্রবার — জুলাই সনদ ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে প্রস্তুত প্রশাসন পুঠিয়ার শিলমারিয়ায় সনাতনী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের নারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা ভাঙ্গুড়ায় আড়াই লক্ষ টাকার নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জাল পুড়িয়ে ধ্বংস সিলেটে আ.লীগ নেতা বালু আপ্তাব পুলিশের জালে বাগমারা গণিপুরে অধ্যাপক কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ৩১ দফা গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ
হাসিনাকে খুশি রাখতে ভয়ানক ছিলেন মোহাইমেনুর রশিদ

হাসিনাকে খুশি রাখতে ভয়ানক ছিলেন মোহাইমেনুর রশিদ

Manual4 Ad Code

তদন্ত রিপোর্ট: জুলাই আন্দোলন দমনে বেপরোয়া ময়মনসিংহের এডিশনাল এসপি এসএম মোহাইমেনুর রশিদ এখনও রয়েছেন বহাল তবিয়তে। জুলাই আন্দোলনের সেই রক্তাক্ত দিনগুলোতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারকে খুশি রাখতে ময়মনসিংহের এডিশনাল এসপি মোহাইমেনুর রশিদ ভয়ানক রকমের বেপরোয়া ছিলেন। তিনি তখন জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে (ডিবি) পুলিশের দায়িত্বে থেকে বিএনপি-জামাত নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের ধরে এনে নানা হয়রানি করেছেন।

তার নির্দেশে গৌরীপুরের কলতাপাড়ায় নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায় থানা পুলিশ, নিহত ৩ জনের মায়ের বুক খালি করে। জুলাইয়ের রক্তের দাগ নিয়ে সেই এডিশনাল এসপি এখনো বেশ ভালোভাবেই আছেন ময়মনসিংহ জেলা পুলিশে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) হিসাবে দায়িত্বে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মাঝে।

মোহাইমেনুর রশিদ ২০২৩ সাল থেকে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশে কর্মরত আছেন। ময়মনসিংহ পুলিশ লাইনে ‘বঙ্গবন্ধু মোড়ল’ বানানোর কারিগর ছিলেন তিনি। সারাদেশে পুলিশের রদবদল হলেও ময়মনসিংহের এডিশনাল এসপি মোহাইমেনুর রশিদ এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়তে। বর্তমানে তাকে জেলা পুলিশের (প্রশাসন ও অর্থ) মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার সুযোগ করে দিয়েছেন পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম। খবর- দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ২০২৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ডিবি ও ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্ব পালন করেছেন। ডিবির দায়িত্ব পালনকালে প্রায় ১৫ মাসে তিনি প্রায় ৫ কোটি টাকা আয় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বে থেকে মহাসড়কে বালির ট্রাক বসানো, পরিবহন সেক্টর ও অবৈধ সিএনজি চলাচলের সুযোগ করে দিয়ে মাসে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ করতেন।

একটি গোপন সূত্র জানিয়েছে, তিনি ট্রাফিক বিভাগ থেকে মাসে কোটি টাকা তুলতেন। গণমাধ্যমে এসব তথ্য প্রকাশের পর সর্বশেষ তাকে ট্রাফিক বিভাগ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Manual7 Ad Code

শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ময়মনসিংহের জুলাই আন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোতে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নির্বিচারে নিরীহ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছেন, তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা এখনো কীভাবে বহাল আছেন—এমন প্রশ্ন তুলে আন্দোলনে যুক্ত একজন ছাত্র বলেন, “ময়মনসিংহের এডিশনাল এসপি মোহাইমেনুর রশিদকে পুলিশ বিভাগ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরিয়ে নিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

ইতিমধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমেনুর রশিদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও পুলিশ হেডকোয়াটারে তিনটি লিখিত অভিযোগ জমা হয়েছে। এছাড়াও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে সাইমন রেজা নামের একজন আইনজীবী লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

Manual8 Ad Code

এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা জানান, তার অন্যায়-দুর্নীতির প্রতিবাদ করলেই কিছু অসৎ পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে বিভিন্নভাবে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হয়। ইতিমধ্যে একজন সিনিয়র সাংবাদিক জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেছেন।

জানা গেছে, ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে গুলিতে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন। ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের কলতাপাড়া বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে কোটা আন্দোলনকারীরা। এ সময় সেখানে পুলিশ উপস্থিত হলে আন্দোলনকারীরা তাদের ওপর ইট-পাটকেল ছুঁড়ে হামলা চালায়। পুলিশ ধাওয়া খেয়ে তাল্লু স্পিনিং মিলের ভেতর আশ্রয় নেয়। মিলের ভেতরে পুলিশের দুটি গাড়িও রাখা ছিল।

আন্দোলনকারীরা সেখানে গিয়ে দুই গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেখান থেকে পুলিশ বের হওয়ার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় দায়িত্বে ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমেনুর রশিদ। তার নির্দেশেই থানা পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। আগুনে মিলের বিপুল পরিমাণ তুলা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস প্রায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গুরুতর আহত ১৮ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তিনজন মারা যান।

হাসপাতালের উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাকিব (১৯), বিপ্লব (১৯) ও যুবায়ের (২১) মারা যান। রাকিব গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের দামগাঁও গ্রামের হেকিম মুন্সির ছেলে। বিপ্লব ডৌহাকলা ইউনিয়নের চুরালি গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে। যুবায়ের মইলাকান্দা ইউনিয়নের কাওয়াত গ্রামের আনোয়ার উদ্দিনের ছেলে।

গৌরীপুর উপজেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মৌপ্রিয়া মজুমদার গণমাধ্যমে জানান, “আমি তখন পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কারা মারা গেছেন, তা আমার জানা ছিল না।”

Manual6 Ad Code

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমেনুর রশিদ গণমাধ্যমে জানান, “আমি তখন জেলা পুলিশের দায়িত্বে ছিলাম। তবে গুলি করার কোনো নির্দেশ আমি দেইনি। জেলা পুলিশ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন এসপি স্যার।”

Manual4 Ad Code

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo

Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code
error: Content is protected !!