দারিদ্র্য জয় করে রাস্তায় ঘাম ঝরানো নারীর সাহস—অটোভ্যান চালিয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন সুলতানা! | তদন্ত রিপোর্ট

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
দারিদ্র্য জয় করে রাস্তায় ঘাম ঝরানো নারীর সাহস—অটোভ্যান চালিয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন সুলতানা!

দারিদ্র্য জয় করে রাস্তায় ঘাম ঝরানো নারীর সাহস—অটোভ্যান চালিয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন সুলতানা!

Manual4 Ad Code

মোঃ সুজন আহম্মেদ পাবনা জেলা প্রতিনিধি

পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলার বনয়ারীনগর ইউনিয়নের সোনাহারা গ্রামের মোছা. সুলতানা খাতুন (২৫)। পেশায় তিনি একজন অটো ভ্যানচালক। শুনে অনেকে অবাক হন, কেউ কেউ ঠাট্টাও করেন। কিন্তু এই পথেই জীবনের হাল ধরেছেন তিনি।

Manual6 Ad Code

জানা গেছে, দিনমজুর বাবা মুনতাজ আলী আর গৃহিণী মা বেলে খাতুনের বড় মেয়ে সুলতানা। তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে সুলতানার বিয়ে হয়েছিল একই উপজেলার বিলচাদু গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে। কিন্তু বিয়ের অল্প কিছুদিন পরই তিনি জানতে পারেন, তার স্বামী মাদকাসক্ত। শুরু হয় নির্যাতন ও অভাবের দুঃসহ জীবন। শেষমেশ একদিন সহ্য করতে না পেরে ফিরে আসেন বাবার বাড়িতে। সেখান থেকেই শুরু হয় নতুন সংগ্রাম। শুরু করেন অটো ভ্যান চালানো। প্রথম দিকে তিনি অন্যের ভ্যান ভাড়ায় চালাতেন। প্রতিদিন যা আয় করতেন, তার বড় অংশই চলে যেত মালিকের হাতে। পরে বাবা-মা কিস্তিতে টাকা তুলে কিনে দেন একটি পুরোনো ভ্যান। এখন প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাস্তায় ছুটে চলেন তিনি। আয় হয় দিনে দুই থেকে তিনশ টাকা। তবুও সমাজের বাঁকা কথা, লোকজনের উপহাস, সবকিছু উপেক্ষা করে রাস্তায় নামেন ভ্যানের হ্যান্ডেল হাতে নিয়ে।

Manual6 Ad Code

সুলতানা খাতুন বলেন, শুরুতে সবাই হাসত। বলত মেয়ে মানুষ ভ্যান চালাবে? কিন্তু এখন সেই রাস্তাতেই আমি নিজের ঘাম দিয়ে সংসার চালাই। কেউ সাহায্য না করলেও আমি থামব না। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।

সুলতানার মা বেলে খাতুন আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়ে ছোটবেলা থেকেই কষ্টের মধ্যে বড় হয়েছে। আমরা গরিব, তাই ওর কষ্টটা বেশি। ও এখন ভ্যান চালায় এটা শুনে অনেকেই হাসে, কিন্তু আমি গর্ব করি। মেয়েটা নিজের ঘাম দিয়ে সংসার চালাচ্ছে।

প্রতিবেশী আমেনা বেগম বলেন, আগে ভাবতাম মেয়ে হয়ে ভ্যান চালানো লজ্জার কাজ। এখন দেখি ওই মেয়েটাই তো সবার উদাহরণ হয়ে গেছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করে কিন্তু মুখে কোনো অভিযোগ নেই। ওর মতো মেয়েরা সমাজের গর্ব।

Manual6 Ad Code

সুশীল সমাজের নেতারা বলছে, একজন নারী, যিনি সমাজের বাঁধাধরা ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। সুলতানা এখন কেবল একজন অটো ভ্যান চালক নন, তিনি হয়ে উঠেছেন দৃঢ়তা ও আত্মসম্মানের প্রতীক। তবে একজন মেয়ে হয়ে রাস্তায় গাড়ি চালানো টা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। বিত্তবান ও উপজেলা প্রশাসনের উচিত মেয়েটার পাশে এসে দাঁড়ানো। একটা স্থায়ী রোজগারের ব্যবস্থা করে দেয়া।

বনয়ারীনগর ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম বলেন, “সুলতানা খুব পরিশ্রমী ও সাহসী। তার পরিবারটা একেবারেই নিম্নবিত্ত। আমি চাই, সমাজের বিত্তবানরা তাকে সহযোগিতা করুক।”

Manual5 Ad Code

ফরিদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব হাসান জানান, সুলতানা যদি লিখিত আবেদন করে, উপজেলা প্রশাসন থেকে তাকে সহযোগিতা করা হবে।

মো: সুজন আহম্মেদ
পাবনা (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া)
মোবা: ০১৭১১৬৭৪২৪৬
১০ অক্টোবর ২০২৫

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo

Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code
error: Content is protected !!