জগন্নাথপুরে এলজিইডি প্রকল্পের রাস্তার কাজে  অনিয়ম, তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দাবি | তদন্ত রিপোর্ট

শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
পাবনা ফরিদপুর ও সাঁথিয়ার যৌথ অভিযানে ৪০ লাখ টাকার চায়না দুয়ারি জাল ধ্বংস পাবনা বিটিসিএল অফিসে অনিয়ম–অবহেলা চাহিদা নেই দাবি করলেও কোটি টাকার সরকারি ব্যয়; সেবায় ভোগান্তি, পুনর্গঠনের দাবি পুকুরের মাঝে বিদ্যুতের খুঁটি, আতঙ্কে রয়েছে গ্রামের মানুষ রৌমারীতে জামালপুর ব্যাটালিয়নের (৩৫ বিজিবি) অভিযানে আসামীবিহীন ভারতীয় মদ-১৬ বোতল আটক। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির লটারিতে প্রাপ্ত ডিলারশিপ বুঝে না পেয়ে ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জনগণের দোরগোড়ায় অধ্যাপক কামাল হোসেন — বাগমারায় ৩১ দফা প্রচারে সরব বিএনপি দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে টেকসই পরিকল্পিত উন্নয়ন অবকাঠানো নির্মাণের দাবি রাইট টক বাংলাদেশের। শিক্ষকদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানববন্ধন অবৈধ লটারিতে প্রশাসনের নীরবতা: পুরস্কারের প্রলোভনে নিঃস্ব সাধারণ মানুষ
জগন্নাথপুরে এলজিইডি প্রকল্পের রাস্তার কাজে  অনিয়ম, তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দাবি

জগন্নাথপুরে এলজিইডি প্রকল্পের রাস্তার কাজে  অনিয়ম, তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দাবি

অনিয়ম

Manual1 Ad Code

তদন্ত রিপোর্ট ডেস্ক: সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার ৬নং রানীগঞ্জ ইউনিয়নের রৌয়াইল গ্রামে এলজিইডি প্রকল্পের অধীনে প্রায় ১ কিলোমিটার দীর্ঘ আরসিসি ঢালাই রাস্তায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জনগণের দাবি, রাস্তার কাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে, যা খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এলাকাবাসী এই অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই প্রকল্পের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সালেহ ট্রেডার্স নামক এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে, যার মালিক সালেহ চৌধুরী। কিন্তু শুরু থেকেই তিনি সরকারি নির্দেশনা ও প্রকল্পের শর্তাবলি উপেক্ষা করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

Manual7 Ad Code

প্রকল্পের আওতায় উচ্চমানের ভিট-বালু, পাথর, সিমেন্ট ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহারের কথা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ঝুকিপূর্ণ কুশিয়ারা নদীর পাড় থেকে উত্তোলিত নিম্নমানের মাটি। যা রাস্তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং অল্প সময়ের মধ্যেই এই দেভে যেতে পারে।

স্থানীয়দের দাবি, রাস্তার কার্পেটিং ও ঢালাইয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উপাদানের পরিবর্তে অনুপযুক্ত মাটি ও নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই এই রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে এবং সাধারণ মানুষের চলাচলে সমস্যা দেখা দেবে। বিষয়টি নজরে আসার পর স্থানীয়রা একাধিকবার স্থানীয় এলজিইডি অফিসে অভিযোগ জানান। তবে, প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। বরং তারা ঠিকাদারের কাজের অনিয়মকে উপেক্ষা করেছেন এবং এই অবৈধ কার্যকলাপ চলতে দিয়েছেন।

Manual7 Ad Code

এলাকাবাসীর দাবি, ঠিকাদার সালেহ চৌধুরী রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে এ ধরনের অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। পূর্বে এক গাড়ি চালক রাস্তার বেহাল দশার প্রতিবাদ করলে তার ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয় এবং তার বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। এছাড়াও আরসিসি ঢালাই কাজ শুরুর পূর্বে ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব হোসেন মিটু রাস্তা ড্রেসিং না করে দিলে ঠিকাদার কাজ করবে না বলে জানায়।

Manual7 Ad Code

আরসিসি ঢালাই কাজ শুরুর আগে ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব হোসেন মিটু রাস্তার ড্রেসিং না করা হলে ঠিকাদার কাজ করবে না বলে জানায়। পরে গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ করে রাস্তার ড্রেসিং সম্পন্ন করেন, যাতে কাজটি সঠিকভাবে করা হয়।

Manual7 Ad Code

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণের জন্য কুশিয়ারা নদী থেকে মাটি সংগ্রহ করা হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ফলে স্থানীয় কৃষিজমি ও বসতবাড়িও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। ঠিকাদার সালেহ চৌধুরী আগেও একাধিক সরকারি প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে পূর্বেও অভিযোগ উঠলেও, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় তিনি বারবার রক্ষা পেয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক রাজন বলেন, আমরা এই রাস্তার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছি। কিন্তু এখন দেখছি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এই রাস্তা কয়েক মাসের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাবে।
আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা সাজু আহমেদ, বলেন, নদী থেকে এভাবে মাটি উত্তোলন করা হলে তা শুধু রাস্তার জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং এটি পুরো অঞ্চলের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশগত ক্ষতির কারণ হতে পারে। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিক।
এছাড়াও, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। প্রতিবাদ করলেই তিনি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

ঠিকাদার সালেহ চৌধুরীর অনিয়মের চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দা রুনু আহমদ। পরে রুনু আহমদকে ঠিকাদারের তথাকথিত এক বড় জানান, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে চেলে গেছে, সেদিকে কোন খেয়াল নেই, অথচ ছোট একটি কাজ নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি। পরবর্তীতে কমেন্টে এসে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

এলাকাবাসী দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এবং প্রকল্পের গুণগতমান নিশ্চিত করতে তদন্ত পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অনিয়ম বন্ধ করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন। এদিকে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্লাহর অফিস অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo

Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code
error: Content is protected !!